সৈয়দ নুরুল হুদা
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২০ বৃহস্পতিবার, ০৮:১১ এএম
করোনা পরিস্থিতির এই সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। এভাবে আরো কিছুদিন চললে একটি শিক্ষাবর্ষের বড় একটি অংশজুড়ে বঞ্চিত হবে শিক্ষার্থীরা।
বর্তমানে করোনা মহামারীতে ঘরে বসে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিযে নেওয়ার উপর জোর দেয়া হচ্ছে। সবশেষ খবর হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ১৫জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এ অবস্থায় কীভাবে চলবে শিক্ষা কার্যক্রম।চট্টগ্রামের আনোয়ারায় শাহ ই দরবার ইসলামী কমপ্লেক্স ট্রাস্ট পরিচালিত আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে গত ৩১ বছর ধরে বাসায় বসে পাঠ্যক্রম চর্চা ও পরীক্ষা পরিচালনার একটি পরীক্ষিত পদ্ধতির চর্চা আছে। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব।
আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রতিটি পরীক্ষার জন্য বিষয়ভিত্তিক ও সিলেবাস অনুযায়ী ১ টি প্রশ্নের জন্য ৩ টি প্রশ্ন অর্থাৎ ১০ টি প্রশ্নের জন্য ৩০ টি প্রশ্ন শিক্ষার্থীবে সাজেশন হিসাবে দেয়া হয়। সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা নিজেদের ঘরে বসে পাঠচর্চা করতে পারে। নির্দিষ্ট সাজেশন ও সিলেবাস থেকে প্রশ্ন তৈরি করে শিক্ষকগন পরীক্ষা গ্রহণ করবে । এতে শিক্ষার্থী যেমন পরীক্ষায় উৎসাহিত হয়, একইভাবে অসুদপায় অবলম্বনের মানসিকতাও থাকে না। এভাবে কয়েকটি পরীক্ষার মাধ্যমে সিলেবাস পুরোপুরি শেষ করা সম্ভব।
বাংলাদেশে এখনও বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেসরকারি। শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন, পরীক্ষার ফি থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের (বেসরকারি শিক্ষক / কর্মচারীর/ এমপি ও নন এমপিও ভুক্ত ) বেতন ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয় নির্বাহ হয়। বর্তমান অবস্থার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোন আয় না থাকায় শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বন্ধ হওয়ার উপক্রম। আবার শিক্ষকরা অন্য পেশার দিকে ঝুঁকলে তাতে শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার অপূরণীয় ক্ষতি হবে । দূরশিক্ষণের মামে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চালু রাখা গেলে টিকে যাবে প্রতিষ্ঠানগুলো। শিক্ষকদেরও বেতন-সম্মানী বঞ্চিত হতে হবে না ।
ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেসরকারি কওমী মাদ্রাসাগুলোর বিশাল অনুদান ঘোষণা করেছেন। একইভাবে কওমী নয় এমন হাজার হাজার অনুদানবিহীন কলেজ, মাদ্রাসা, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে, নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় এখন চরম সংকটে। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সরকার বিশেষ সহায়তা ঘোষণা করলে তা শিক্ষা বিস্তারে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রামের ১৩ নম্বর সংসদীয় ( আনোয়ারা ও পশ্চিম পটিয়া ) আসনে উপজেলা সদরে অবস্থিত মুহাম্মদীয়া কুদ্দুসিয়া সুন্নিয়া আলিম মাদ্রাসা। যা দাখিল পর্যন্ত এমপিওভুক্ত আছে। ২০ বছর যাবত আলিম শ্রেণী খুলে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হয়েও এবং শতকরা ৯০ পরিক্ষার্থী পাশ , মন্ত্রণালয়ের ভূমিমন্ত্রীর ডিও লেটারসহ যথাযথ শর্ত পূরণ করার পর ও অনুদানভুক্ত হতে পারেনি। এতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, কর্মচারীর বেতন বন্ধ হওয়ার শংকা তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন বাঁচাতে সরকারের প্রতি প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা ও মহাপরিচালক-শাহ ই দরবার ইসলামী কমপ্লেক্স ট্রাস্ট