আজাদ মঈনুদ্দীন
প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২০ শনিবার, ০৫:৫৯ পিএম
চেরাগি মোড়ে যেখানে আগে সেন্টার পয়েন্ট হাসপাতাল ছিল সেখানে বিশ্বমানের হাসপাতাল বানাবে এস আলম । এটি লোকমুখে শোনা। এর খানিকটা দূরে জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ ভেন্টিলেশনে শুক্রবার (২২মে) রাতে ছটফট করে মারা গেলেন করোনায় আক্রান্ত বড় ভাই মোরশেদুল আলম।
শেষ নি:শ্বাস নেয়ার সময় কেউ তাঁর মুখে একটু পানি দিতে পেরেছিলেন কিনা আমি জানি না। মায়ের যে ৭ ছেলে ছিল চোখের ধন, সেখান থেকে বড় ফুলটি ঝড়িয়ে দিয়েছে অদৃশ্য ভাইরাস। সন্তানের জন্য বৃদ্ধ মায়ের হৃদয়ে আজ যতটা রক্তক্ষরণ, ভাইয়ের জন্য শিল্পপতি সাইফুল আলম মাসুদের (এস আলম) রক্তক্ষরণ কোন অংশে কম নয়। এই রক্তক্ষরণ অক্ষমতার; টাকার পাহাড় থেকেও ভাইকে বাঁচাতে না পারার। জানাযার নামাজে হাজির থাকতে না পারার।
একটি ভেন্টিলেশন যন্ত্রের দাম কত আর, ২০ থেকে ৪০ লাখ টাকা। সেই যন্ত্র ভাগাভাগি করতে হয়েছে দেশের নামী শিল্পগ্রুপের মালিকের বড় ভাই মোরশেদুল আলম ও ছোট ভাই রাশেদুল আলমকে। অন্য সময়ে এই জেনারেল হাসপাতালে এস আলম পরিবারের প্রিয় ড্রাইভারটিও চিকিৎসা নিতে যাবে কিনা আমি জানি না। কিন্তু এখন যে বড় অসময়। স্বাভাবিক সময় হলে হয়ত ভাইয়ের জন্য এমন শ’খানেক ভেন্টিলেশন যন্ত্রের স্তুপ করে ফেলতেন। তৈরি করে নিতেন পুরো একটি আইসিইউ ওয়ার্ড। নিয়ে যেতেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাসপাতালে।
করোনা ভাইরাস লন্ডভন্ড করে দিয়েছে সবকিছু। ধনী-গরিব সবাইকে এক কাতারে নামিয়ে এনেছে। এস আলমের ভাইয়ের যদি এই অবস্থা হয় আমার আপনার কী দশা হবে।
আরেকবার ভাবুন। এই ঈদে ঘরে থাকবেন, না করোনা নিয়ে পুরো পরিবারসহ কবরস্থানে যাবেন। যেখানে আত্মীয়-স্বজনেরা জানাযা পড়ার সুযোগটিও পাবে না। সিদ্ধান্ত কিন্তু আপনার।
azadmoin@gmail.com